Fiverr account এ Gig কি ?
গিগ হল আপনি যে সার্ভিসটি সেল করবেন তার অফারের নাম। অর্থাৎ সকল ধরনের সার্ভিসের অফারকে গিগ বলে। ফাইভার মার্কেটপ্লেসে গিগ রেট কম ডলার দেখে
অনেকে কাজ করতে কম উৎসাহিত হয়। আসলে বিষয়টি এই রকম না। আপনি ৫ – ১০০০০ ডলার এর প্রোজেক্ট ফাইভারে করতে পারবেন।
এই মার্কেটপ্লেসে কাজ করে অনেকে প্রতিমাসে গড়ে ১০০০ ডলারও আয় করছে।
Gigs®
রেঙ্ক বা লেভেলের উপর ভিত্তি করে একজন সেলার নির্দিষ্ট পরিমান একটিভ গিগ পোষ্ট করতে পারবে।
একজন নতুন সেলার ৭ টা, লেভেল ১ সেলার ১৫ টা, লেভেল ২ সেলার ২০ টা এবং টপ রেটেড সেলাররা ৩০ টা গিগ তৈরি করতে পারবেন।
গিগের Impressions, Views এবং Clicks এর দ্বারা কি বোঝায় এবং এগুলো কেন গুরুত্বপূর্ণ ?
Fiverr এ My Gigs এ গেলে দেখবেন আপনার গিগগুলার কিছু অ্যানালাইটিক ডাটা দেখাবে, যার মধ্যে থাকে Impressions, Clicks, Views,
Orders, Cancellations । একটা গিগের জন্য এই ডাটাগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই ডাটাগুলো মূলত শেষ ৩০ দিনে আপনার গিগের ডাটা, এগুলো রেগুলারলি
অটো আপডেট হয়।
Impressions:
কেউ যখন Fiverr এ কোনো গিগ খোঁজার জন্য সার্চ দেয় তখন আপনার গিগটি সেই সার্চ রেজাল্টে কতবার দেখিয়েছে সেটাই হল Impression.
এখানে যেই সংখ্যাটা দেখানো হয় সেটা হল শেষ ৩০ দিনে সার্চ রেজাল্টে আপনার গিগটিকে কয়বার দেখানো হয়েছে। আপনার গিগের ইম্প্রেশন বেশি হলে বুঝবেন
যে সার্চ রেজাল্টে আপনার গিগটি বারবার দেখানো হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই বোঝা যায় যে আপনার গিগ যদি কোনো ভালো কিওয়ার্ডের জন্য সার্চ রেজাল্টে প্রথমে
থাকে তাহলে গিগের Impressions বেশি হবে। আপনার গিগ যদি ফিচার করা হয় বা ক্যাটাগরির হোমপেইজে দেখানো হয় তাহলে সেইগুলোও Impressions
হিসেবে কাউন্ট করা হবে।
Clicks:
আপনার গিগটি সার্চ রেজাল্টে দেখার পর সেই রেজাল্টে কতজন ক্লিক করছে সেটা হল clicks. কোনো বায়ার আপনার গিগে ক্লিক করার
মানে হল সে আপনার গিগটি কিনতে আগ্রহী। তাই clicks খুব ইম্পোর্ট্যান্ট। Click যত বেশি হবে, আপনার গিগ সেল হওয়ার সম্ভাবনা তত বাড়বে।
আমাকে মাঝে মাঝে অনেকেই প্রশ্ন করে, গিগের Impressions অনেক, কিন্তু clicks নেই, কি করব। এটার মানে হল, সার্চ রেজাল্টে আপনার গিগটা
দেখার পর বায়ার আর ক্লিক করছে না, কারণ আপনার গিগের টাইটেল এবং পোর্টফোলিও ইমেজটি দেখে বায়ার ক্লিক করার আগ্রহ পাচ্ছে না। এক্ষেত্রে আপনার
গিগের টাইটেল এবং পোর্টফোলিও ইমেজটিকে বদল করেন, আপনার গিগ রিলেটেড গিগ যাদের আছে, সেগুলো থেকে ধারণা নিতে পারেন, কিন্তু কখনোই কপি পেষ্ট
করবেন না।
Views:
একটা গিগে অনেকগুলো পেইজ থাকে, যেমন Overview, Compare Packages, Descriptions, Reviews । বায়ার গিগ কেনার
আগে এই পেইজগুলো দেখবে এটাই স্বাভাবিক। একজন বায়ার আপনার গিগে ক্লিক করার পর গিগের কয়টা পেইজ দেখলো সেটা হল Views। এখানে শেষ
৩০ দিনে আপনার গিগের কয়টা পেইজ ক্লায়েন্টরা দেখেছে সেটা দেখায়।
Orders:
আপনার গিগটি শেষ ৩০ দিনে কয়টা সেল হয়েছে এটা এখানে দেখায়। গিগের Impressions, Clicks আর Views যত বেশি হয় গিগ সেল
হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি থাকে।
Cancellations:
অনেক সময় বিভিন্ন কারনে আপনার অর্ডার Cancel হতে পারে। আপনার গিগ শেষ ৩০ দিনে যতগুলো অর্ডার পেয়েছে তার কত শতাংশ Cancel
হয়েছে সেটা এখানে দেখায়। আপনার গিগের Cancellations যত কম হবে ততই ভালো।
এখানে মোটামোটিভাবে Impressions, Clicks, Views, Order আর Cancellations বিষয়ে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। তারপরও কারো
কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে করতে পারেন, অথবা comment করতে পারেন।
“Gig description” ও “Requirements box” এ ফাইভার অনুমতি দেয় এমন ওয়েবসাইটের লিঙ্ক ব্যাবহার করা যাবে। এছাড়া অন্য কোন ওয়েবসাইটের লিঙ্ক থাকলে গিগ একটিভ হবে না। যদি এমন কোন লিঙ্ক প্রফাইলে থাকে তবে সেটা প্রফাইল থেকে মুছে দেয়া হবে। আর ঘাউড়ামী করে বার বার এই কাজ করলে প্রফাইল “Restricted ” করে দেয়া হবে (কোন কোন সাইটের লিঙ্ক ব্যাবহার করতে পারবেন সেগুলো দেখতে এখানে ক্লিক করুন)
ফাইভারের শর্তের সাথে সাংঘর্ষিক এমন যে কোন গিগ ফাইভার মুছে দেবে।
গিগ পোষ্ট করার সময় গিগে প্রদত্ত সার্ভিষের সাথে মিল রেখে গিগ ইমেজ আপলোড করতে হবে। একজন সেলার প্রতিটা গিগে ৩ টা ছবি আপলোড করতে পারবেন।
ফাইভারের নিয়ম মেনে গিগে ভিডিও আপলোড করা যাবে। (বিস্তারিত এখানে দেখুন)
গিগে এমন কোন বক্তব্য দেয়া যাবে না যা ফাইভারের শর্তসমূহের বিরোধিতা করে।
সেলার চাইলে গিগের “Starting Price” $5, $25, $50 অথবা $100 সেট করতে পারবে।
চাইলে বিভিন্ন পেকেজ আকারেও গিগের মূল্য সেট করে দেয়া যাবে।
Gig Extras কি ?
Gig Extra হচ্ছে মুল কাজের সাথে সম্পর্কযুক্ত অতিরিক্ত কিছু সেবা যেগুলো গিগের সাথে আলাদা ভাবে একজন সেলার যুক্ত করেন। (এই সেবার জন্য ক্লায়েন্টকে আলাদা চার্জ করা হয়)
“Gigs®” সেকশনে যে শর্তগুলো আলোচনা করা হয়েছে সেই শর্তগুলো ভঙ্গে হলে ফাইভার যেকোন Gig Extra মুছে দিতে পারবে। এমনকি এই জন্য ফাইভার চাইলে গিগটাই রিমুভ করে দিতে পারবে।
সেলারের লেভেলের উপর ভিত্তি করে গিগ এক্সটার পরিমান কম বেশি হবে।
নতুন সেলারঃ ১ টা গিগে ২ টা গিগ এক্সট্রা এড করতে পারবেন। একটা গিগ এক্সটা $20 ডলারের বেশি হওয়া যাবে না।
লেভেল 1 সেলারঃ ১ টা গিগে ৪ টা গিগ এক্সট্রা এড করতে পারবেন। একটা গিগ এক্সটা $4০ ডলারের বেশি হওয়া যাবে না।
লেভেল 2 সেলারঃ ১ টা গিগে 5 টা গিগ এক্সট্রা এড করতে পারবেন। একটা গিগ এক্সটা $50 ডলারের বেশি হওয়া যাবে না।
“Top Rated” সেলারঃ ১ টা গিগে 6 টা গিগ এক্সট্রা এড করতে পারবেন। একটা গিগ এক্সটা $100 ডলারের বেশি হওয়া যাবে না। (আরো বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
গিগ এক্সটা তে যে সেবা অফার করা হবে তা অবশ্যই মুল গিগের সাথে সম্পর্কযুক্ত হতে হবে।
প্রতিটি গিগ এক্সটা তে আলাদা আলাদা ভাবে বাড়তি সময় যোগ করা যাবে।
গিগটিকে সার্চের ফলাফলের প্রথমে আনার জন্য এই টিপসগুলো আপনি ফলো করতে পারেন:
১) যেই বিষয় নিয়ে আপনি গিগ তৈরি করবেন সেই বিষয়ের উপর ফাইভারে সার্চ করে প্রথমে দেখতে হবে ঐ ধরনের কাজের মার্কেটপ্লেসে চাহিদা রয়েছে কিনা। অন্যান্য সেলারদের গিগ এর রিভিও দেখলেই সহজেই বুঝতে পারবেন বায়াররা ঐ সকল সার্ভিস অর্ডার করছে কিনা।
আপনি এমন একটি গিগ তৈরি করলেন যেটির মার্কেটপ্লেসে কোন চাহিদা নেই সেক্ষেত্রে আপনার অর্ডার পাবার কোন সম্ভাবনা থাকবে না এইজন্য প্রথমেই সময় নিয়ে রিসার্চ করে কাজ পাবার জন্য চেষ্টা করা উচিৎ।
২) বায়াররা সার্চবক্সে যে কিওয়ার্ড লিখে সার্চ দেয় ওই কিওয়ার্ড যদি আপনার গিগের টাইটেল, ট্যাগ এবং ডেসক্রিপশনে থাকে তাহলে আপনার গিগের সঙ্গে বায়ারের সার্চ ইনপুট বা কিওয়ার্ড ম্যাচ করে সার্চ রেজাল্টের প্রথম দিকে আসতে পারে । তাই এমন ভাবে আপনার গিগ খোলা উচিত যেগুলো বায়াররা ফাইভারের সার্চবক্সে সার্চ করে ।
৩) গিগ হতে হবে সাজানো , গোছালো , যেনও দেখলেই পড়তে মন চায় । গিগের ডেসক্রিপশন সুন্দর করে লেখার জন্য নিচের টিপস গুলো ফলো করতে পারেনঃ
প্যারাগ্রাফ লেখার সময় খুব বেশী বড় করবেন না। ছোট ছোট করে প্যারাগ্রাফ লিখে আপনার সার্ভিস উপস্থাপন করুন।
সার্ভিস বুলেট পয়েন্ট ব্যবহার করে উপস্থাপন করার চেষ্টা করুন।
লেখার সময় খেয়াল রাখবেন গ্রামার এবং স্পেলিং যেন নির্ভুল হয়। গ্রামার চেক করার জন্য “Grammarly” অ্যাডঅন ব্রাউজারে অ্যাড করে নিতে পারেন।
আপনি যে বিষয়ের উপর গিগ তৈরি করবেন ঐ বিষয়ের উপর টপ রেটেড গিগ গুলো দেখে আইডিয়া নিতে পারেন কিভাবে আরও সুন্দর করে লেখা যায় কিন্তু অন্য কারো লেখা কপি করবেন না।
৪) ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন কাউকে হঠাৎ করে দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়, এরকম কিছু ব্যবহার করুন। গতানুগতিকের বাইরে গিয়ে ব্যতিক্রম কিছু করলেই সেটি মানুষকে আকর্ষণ করে। সময় নিয়ে সুন্দর একটি ছবি তৈরি করে তারপর অ্যাড করুন। ছবিটি দেখলেই যেন স্পষ্টভাবে বোঝা যায় আপনি কি ধরনের সার্ভিস দিচ্ছেন।
ছবি তৈরি করার জন্য “Canva” ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন। এই ওয়েবসাইট ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই সুন্দর ব্যানার ডিজাইন করতে পারবেন।
৫) গিগে যদি ভিডিও ব্যবহার করেন তাহলে সেক্ষেত্রে বিক্রির সম্ভাবনা ৪০% বেড়ে যায়। এটা ফাইভার অথোরিটি থেকেই বলা আছে। সুতরাং চেষ্টা করুন, ফাইভারের নিয়ম মেনে ভিডিও তৈরি করে সেটি গিগে ব্যবহার করার জন্য।
ভিডিও অবশ্যই ৭৫ সেকেন্ড বা তার কম হতে হবে।
Fiverr Account সাসপেন্ডেড হওয়া ?
অনেকদিন ধরে Fiverr এ কষ্ট করে কাজ করে ফ্রিল্যান্সাররা একটা ভালো প্রোফাইল তৈরি করার পর যদি কোনো
কারণে সেই প্রোফাইল সাসপেন্ডেড হয় তবে সেটা একজন ফ্রিল্যান্সারের জন্য খুবই কষ্টের। আবার নতুন করে সব
শুরু করাটা অনেক কঠিন। আমরা একটু সতর্ক থাকলেই অ্যাকাউন্ট ব্যান হওয়া থেকে বাঁচতে পারি। Fiverr তাদের Rules & Regulation
ভঙ্গের জন্য অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করে। আমরা অনেকেই Fiverr এর Terms of Service না পড়েই কাজ করি এবং
নিজের অজান্তেই Rule ভেঙ্গে ফেলি। তাই কি কি কারণে অ্যাকাউন্ট ব্যান হতে পারে সেই বিষয়গুলো জানা দরকার। এখানে আমি কমন কিছু বিষয় তুলে ধরলাম :
১) ব্যক্তিগত তথ্য যেমন Email Address, Skype ID ইত্যাদি শেয়ার করার কারণে অ্যাকাউন্ট ব্যান হয় সবচেয়ে বেশি। Fiverr এ এই ধরনের কোনো
তথ্য শেয়ার করা যাবে না। অনেকেই Image বা text file এর মাধ্যমে এসব তথ্য দেয় বায়ারকে, মনে রাখবেন Fiverr আপনার আমার থেকে অনেক
বেশি স্মার্ট, তাই এসব ধরা তাদের জন্য কোনো ব্যাপার না।
২) কোনো বায়ারকে Fiverr এর বাইরে পেমেন্ট দেয়ার জন্য অনুরোধ করা, অথবা কোনো বায়ারের এই ধরনের অনুরোধে রাজি হওয়া।
৩) একই ব্যাক্তির একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকা, Fiverr এর নিয়ম অনুযায়ী এক ব্যক্তির কেবলমাত্র একটি অ্যাকাউন্ট থাকতে পারবে।
৪) Fiverr এর ভিতরে স্প্যামিং করা, বায়ারদেরকে অপ্রয়োজনীয় মেসেজ দেয়া, কোনো কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত পরিমানে কাস্টম অফার পাঠানো।
৫) Fake Review, Fake Like, Fake Follower এসবের সার্ভিস প্রদান সংক্রান্ত গিগ অফার করা।
৬) কোনো বায়ার বা সেলারকে ধর্ম, বর্ণ, জাতি ইত্যাদি নিয়ে অপমানজনক কথা বলা।
৭) Mutual Order এর মাধ্যমে Fake Review নেয়া বা দেয়া।
৮) অন্যের Copyright এবং Trademark করা কিছু বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা।
৯) গিগের description, Image বা অন্য কোনো কিছু অন্যের গিগ থেকে কপি করা।
এর বাইরেও আরো অনেক কারণ আছে অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড হওয়ার। কারো কাছে আরো তথ্য থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন।
আশা করি সবাই Fiverr এর গাইডলাইন অনুসরণ করে চলতে পারব যাতে অ্যাকাউন্ট সাসপেন্সনের কারণে বিশাল কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হতে না হয়।
“Exclusively on Fiverr”
“Exclusively on Fiverr” এই কথাটা অবশ্যই গিগে থাকতে হবে। সেটা লিখে, মুখে বলে, বা ছবির মাধ্যমে যে ভাবে হোক।
তিনবার ভিডিও রিজেক্ট হলে আর কখনই গিগে ভিডিও যুক্ত করতে পারবেন না।
একই ভিডিও একধিক গিগে যুক্ত করতে পারবেন।
ভিডিও যুক্ত করার সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মাঝেই গিগে শো করে।
“ Call to Action” ওয়ার্ড ব্যবহার করবেন । মানে যেগুলি দেখলে একজন বায়ার গিগ কিনার ব্যাপারে উৎসাহিত হয়।
“If you are not happy with our work, then I will redesign it for you until you are 100% satisfied”
নোটঃ সঠিকভাবে গিগ তৈরি করতে পারলে কোন মার্কেটিং ছাড়াই কাজ পাওয়া সম্ভব।
Fiverr-এ অ্যাকাউন্ট খোলা থেকে শুরু কিভাবে সফলতার সাথে ফ্রীলেন্সিং করবেন, কিভাবে গিগ দ্রুত রাঙ্কিং-এ আনবেন এই সব কিছুর A to Z গাইডলাইন দিয়ে দিয়েছি
পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
ধন্যবাদ।
1 Comment
It was an essential learning for me.